বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা
ঢাকা: সরকারি ব্যাংকগুলোর প্রায় ৮ শতাংশ ঋণ কৃষিতে, সেখানে কৃষিতে বেসরকারি ব্যাংকের ঋণ ২ শতাংশেরও কম। যদিও কৃষিতে তুলনামূলক খেলাপি ঋণ কম।
সোমবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে কৃষি ঋণ সংক্রান্ত এক কর্মশালায় একটি গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে আসা এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
বিভিন্ন ধরনের ২৪টি ব্যাংকের তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈচিত্র্য নেই কৃষি খাতের ব্যাংক ঋণে। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কৃষি ঋণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শষ্য উৎপাদনে মোট কৃষি ঋণের ৫৯ শতাংশ দেওয়া হচ্ছে। আর প্রাণিসম্পদ ও পোল্ট্রিতে ১০ শতাংশ, মৎস্যে ৯ শতাংশ, দারিদ্র্য বিমোচনে মাত্র ৬ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়েছে। যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দেওয়া হয়েছে ১ শতাংশ ঋণ। আর শষ্য গুদামজাতকরণে এ হার শূন্যের কোটায়।
কৃষি খাতের বৈচিত্র্যহীন ঋণ বিতরণের কারণে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে না। উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে কৃষিতে ভ্যালু চেইন ফ্যাইন্যান্সের ওপর জোরারোপ করতে বলা হয়েছে বিআইবিএম’র ওই প্রতিবেদনে। এছাড়া কৃষিতে তুলনামূলক খেলাপি ঋণ কম বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
বিআইবিএম এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণ সংক্রান্ত একটি আলাদা গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছে। যাতে কৃষি খাতে সঠিকভাবে কৃষি ঋণ বিতরণ হয়। কৃষি ঋণে ভ্যালু চেইন ব্যবস্থা এখনও চালু হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে। যাতে দ্রুত এ ধরনের ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হয়।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্যে আয়োজনের উদ্দেশ্য বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু করেন বিআইবিএম’র মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। তিনি উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে কৃষি ঋণ দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএম এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান।
কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএম’র অধ্যাপক এবং পরিচালক (ডিএসবিএম) মো. মহিউদ্দিন সিদ্দিকী। গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন- বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য শেখ নাজিবুল ইসলাম, বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক তানভীর মেহদী, বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক রেক্সোনা ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক ইসমত কোয়ায়িশ।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, কৃষি খাতের চাহিদার মাত্র ৩০ শতাংশ ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে পূরণ হচ্ছে। বাকি সামান্য কিছু বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে চাহিদা পূরণ হচ্ছে, কিন্তু একটি বড় অংশ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি ঋণ বিতরণ হচ্ছে ৯ শতাংশ সুদে। কিন্তু ঋণ পরিচালন ব্যয় ১০ শতাংশের বেশি। এজন্য বছর শেষে মূলধন ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। যা সরকার পূরণ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
এসই/এমজেএফ